কোরানের অনুসরণেই মানব জাতির মুক্তি

মানবকণ্ঠ
কোরানের অনুসরণেই মানব জাতির মুক্তি

মানবজাতির সার্বিক জীবনের কল্যাণের জন্য মহান আল্লাহ্ পাক পবিত্র কোরান নাজিল করেছেন। বিশ্বনবী (সা:)-এর ওপর পবিত্র এই গ্রন্থটি নাযিল হয়। কোরানের বাস্তব চিত্র ছিলেন প্রিয়নবী (সা:) নিজেই। বর্তমানে পবিত্র কোরান ব্যতীত আর কোনো ধর্মগ্রন্থ অবিকৃত নেই। এটা পবিত্র কোরানের বড় মোজেজা। কারণ, মহান আল্লাহ্ নিজেই এর দায়িত্ব নিয়েছেন। কেউ আজ পর্যন্ত কোরানের বিশুদ্ধতার ব্যাপারে প্রশ্ন তোলার দুঃসাহস দেখাতে সমর্থ হয়নি। যারাই পবিত্র কোরানের প্রতি মিথ্যা আরোপ করতে চেয়েছিল শেষ পর্যন্ত তাদেরকে কোরানের দিকেই ফিরে আসতে হয়েছে। কোরানের মোজেজা, মাহাত্ম্য দেখে ইসলাম গ্রহণ করতে বাধ্য হন।

ইসলাম আল্লাহর মনোনীত ধর্ম। আর মুসলমান জাতির জন্য বিশ্বনবী (সা:) এবং পবিত্র কোরান অনন্য উপহার। পবিত্র কোরানের সব কথা মহান আল্লাহ্ নিজেই বলেছেন। কোনো নবী, রাসুল কিংবা কোনো মানুষ এই পবিত্র গ্রন্থে নিজে থেকে কিছুই সংযোজন করেননি। কিংবা যুক্ত করার কোনোই সুযোগ নেই। পৃথিবীর সব পুস্তকে ভুলভ্রান্তি থাকলে তা পরবর্তী সংস্করণে সংশোধনের সুযোগ থাকে। পবিত্র কোরানই একমাত্র গ্রন্থ যাতে কোনো ধরনের সংশোধনের সুযোগ নেই। এটি কেয়ামত অবধি অবিকৃতই থাকবে, যা মহান আল্লাহর অকাট্য প্রতিশ্রæতি। পবিত্র কোরানে মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপনের দিকনির্দেনা রয়েছে। কিভাবে পৃথিবীর মানুষ সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারবে তা বাতলে দেয়া হয়েছে মহান আল্লাহর প্রেরিত সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ এই কিতাবে। পবিত্র এই কোরান প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (সা.)-এর ওপর নাযিল করা হয়েছে রমাদান মাসে। কোরানুল কারীমে ইরশাদ হয়েছে, ‘রমাদান মাস, যাতে কোরান নাযিল করা হয়েছে যা মানুষের জন্য হিদায়াত স্বরূপ এবং হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলি ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে।’ (সূরা বাকারা, আয়াত: ১৮৫)।

কোরানের প্রতিটি হরফ পাঠ করলে দশটি নেকি লাভ করা যায়। হযরত ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাবের একটি হরফ পাঠ করল, এতে সে দশটি নেকির অধিকারী। তিনি আরো বলেন, আমি বলছি না যে, আলিফ-লাম-মীম একটি হরফ। বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ এবং মীম একটি হরফ।’ (তিরমিযি)।
আমাদের প্রতেক্যের অবশ্যই কর্তব্য নিয়মিত কোরান পড়া, আল কোরানের চর্চা করা। নয়তো আমাদের অন্তর বিরান ঘরের মতো হয়ে যাবে। আল কোরান সৃষ্টি জগতের স ষ্টা মহান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে নাযিল হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘কিতাব অবতীর্ণ হয়েছে পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় আল্লাহর পক্ষ থেকে।’ (সূরা যুমার)। পবিত্র কোরান লওহে মাহফুযে লিপিবদ্ধ। কোরানুল কারীমে বলা হয়েছে, ‘বরং এটা মহান কোরান, লওহে মাহফুযে লিপিবদ্ধ।’ (সূরা বুরূজ)।

আল কোরানের আরেকটি মর্যাদা হলো, এটি একটি চ্যালেঞ্জময় গ্রন্থ। কোরান নিয়ে মহানআল্লাহ চ্যালেঞ্জ ঘোষণা করে বলেন, ‘বলুন, যদি মানব ও জিন এই কোরানের অনুরূপ রচনার জন্যে জড়ো হয় এবং তারা পরস্পরের সাহায্যকারীও হয়; তবুও তারা কখনো এর অনুরূপ রচনা করে আনতে পারবে না।’ (সূরা বনী ইসরাঈল)। মর্যাদাপূর্ণ এই কিতাবের অনুসরণ, পাঠ করা থেকে আমাদের মুসলমান সমাজ যোজন যোজন দূরে। যে কারণে পৃথিবীর মুসলমানরা আজ বিভিন্ন দেশে নির্যাতন, নিপীড়নের শিকার। তারা আজ নিজেদের মধ্যে বিবাদে জড়িয়ে পড়েছে। বিভক্তির কারণে মুসলিমবিদ্বেষী শক্তি নির্যাতন করার সাহস পাচ্ছে। আমাদের উচিত কোরানকে আঁকড়ে ধরে তার অনুসরণ করা। এতেই মানবজাতির মুক্তি ও কল্যাণ নিহিত। এই সুমহান মর্যাদামণ্ডিত গ্রন্থের পূর্ণ হক আদায় করে বেশি বেশি কোরান তিলাওয়াত করে এর অর্থ তাফসির বুঝে জীবনযাপন করা আমাদের কর্তব্য। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে কবুল করুন। আমিন।

লেখক- কাজী আবু মোহাম্মদ খালেদ নিজাম : শিক্ষক ও প্রাবন্ধিক

সূত্র: মানবকণ্ঠ

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন