কুরআন হাদীস ও চার ইমামদের দৃষ্টিতে মাযহাব
বর্তমানে সারাবিশ্বে মুসলমানের সংখ্যা আড়াইশো কোটিরও বেশী। পৃথিবীর প্রত্যেক তিনজন ব্যাক্তির মধ্যে একজন মুসলমান। অমুসলিমদের কাছে আমরা অর্থাৎ ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা মুসলমান বলে পরিচিত হলেও মুসলিমরা নিজেদের মধ্যে অনেক নামে পরিচিত। যেমন, হানাফী, শাফেয়ী, মালেকী, হাম্বলী প্রভৃতি। এই নাম গুলি আল্লাহ বা মুহাম্মাদ (সা)এর দেওয়া নয় এমনকি যাঁদের নামে এই মাযহাব তৈরি করা হয়েছে তারাও এই নাম গুলো দেয়নি।
মুসলমানদের মধ্যে প্রচলিত চারটি মাযহাব, দল বা ফিকাহ ইসলামের কোনো নিয়ম বা বিধান মেনে তৈরি করা হয়নি। কারন ইসলাম ধর্মে কোনো দলবাজী বা ফিরকাবন্দী নেই। মুসলমানদের বিভক্ত হওয়া থেকে এবং ধর্মে নানা মতের সৃষ্টি করা থেকে কঠোরভাবে সাবধান করা হয়েছে। এই মাযহাবগুলো রসুল (সা)এবং সাহাবাদের (রা)সময় সৃষ্টি হয়নি। এমনকি ঈমামগনের সময়ও হয়নি। চার ইমামের মৃত্যুর অনেক বছর পরে তাঁদের নামে মাযহাব তৈরি হয়েছে। কোরআন হাদীস ও চার ইমামের দৃষ্টিতে মাযহাব কি, কেন, মাযহাব কি মানতেই হবে, মাযহাব মানলে কি গোনাহ হবে, সে সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করব ইনশাল্লাহ্!
মাযহাব তৈরিতে আল্লাহর কঠোর নিষেধাজ্ঞা
মুসলমানরা যাতে বিভিন্ন দলে আলাদা বা বিভক্ত না হয়ে যায় সে জন্য আল্লাহ পাক আমাদের কঠোরভাবে সাবধান করেছেন। যেমন আল্লাহ তাআলা কুরআনের সূরা আন-আমর এর ১৫৯ নম্বর আয়াতে বলেছেন, “যারা দ্বীন সন্বন্ধে নানা মতের সৃষ্টি করেছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে হে নবী! তাদের সাথে আপনার কোনও সম্পর্ক নেই; তাদের বিষয় আল্লাহর ইখতিয়ারভুক্ত। আল্লাহ তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে অবগত করবেন। একটু থামুন। উপরের আয়াতটা দয়া করে বারবার পড়ুন এবং বোঝার চেষ্টা করুন, চিন্তা করুন। আল্লাহ তাআলা সরাসরি বলেছেন যারা দ্বীন বা ধর্মে অর্থাৎ ইসলামে নানা মতের সৃষ্টি করেছে এবং বিভক্ত হয়েছে, তাদের সাথে আমাদের নবী মহাম্মাদ (সা) এর কোনো সম্পর্ক নেই। যার সাথে নবীজীর (সা) কোনো সম্পর্ক নেই সে কি মুসলমান? সে কি কখনো জান্নাতের গন্ধও পাবে? আমরা মুসলমান কোরআন হাদীস মাননে ওয়ালা এটাই আমাদের একমাত্র পরিচয়। আল্লাহ বলেন এবং তোমাদের এই যে জাতি, এতো একই জাতি; এবং আমিই তোমাদের প্রতিপালক, অতএব আমাকে ভয় করো। (সূরা মুউমিনুন ২৩/৫২)। তাহলেই বুঝতেই পারছেন ফরয, ওয়াজীব ভেবে আপনারা যা মেনে চলছেন আল্লাহ তা মানতে কত কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন তবে শুধু এইটুকুই নয় আল্লাহ আরও অনেক আয়াতে এ ব্যাপারে মানুষকে সাবধানবানী শুনিয়েছেন। যেমন সূরা রূমের একটি আয়াত দেখুন যেখানে আল্লাহ পাক বলছেন, তোমরা ঐ সকল মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না যারা নিজেদের দ্বীনকে শতধা বিচ্ছিন্ন করে বহু দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। প্রত্যেক দল নিজেদের কাছে যা আছে তা নিয়ে খুশি (সূরা রুম ৩০/৩১-৩২)। বর্তমানে আমাদের সমাজের অবস্থাও ঐ মুশরিকদের মতো। ইসলামকে তারা (মাযহাবীরা) বিভিন্ন দলে বিভক্ত করেছে এবং তাদের নিজেদের কাছে যা আছে তা নিয়েই তারা খুশি। তাদের সামনে কোনো কথা উপস্থাপন করলে তারা বলেনা যে কুরআন হাদীসে আছে কি না। তারা বলে আমাদের ইমাম কি বলেছে। এরা কুরয়ান হাদীসের থেকেও ইমামের ফিকাহকে অধিক গুরুত্ব দেয়। অথচ ইসলামের ভিত্তি হচ্ছে কুরআন হাদীস। তা ছাড়া অন্য কিছু নয়। উপরের আযাতে আল্লাহ তাআলা আমাদের উপদেশ দিয়েছেন তোমরা মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না; তোমরা ইসলামে মাযহাবের সৃষ্টি করো না। অথচ আমরা কুরআনের নির্দেশকে অগ্রাহ্য করে দ্বীনে দলের সৃষ্টি করেছি এবং নিজেকে হানাফী, মালেকী বা শাফেরী বলতে গর্ব অনুভব করছি। আল্লাহ বলেন, হে ইমানদারগন তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সামনে অগ্রগামী হয়ো না, এবং আল্লাহকে ভয় করো; আল্লাহ সর্বশ্রোতা, মহাজ্ঞানী (সূরা হুরুরতে/০১) আমার প্রিয় মাযহাবী ভাইয়েরা! এরকম কোরআনের স্পষ্ট নির্দেশ জানার পরও কি আপনারা মাযহাবে বিশ্বাসী হবেন এবং নিজেকে মাযহাবী বলে পরিচয় দেবেন। যারা জানে না তাদের কথা আলাদা। আল্লাহ বলেন,বলো, যারা জানে এবং যারা জানেনা তারা কি সমান? (সূরা যুমার ৩৯/০৯)। তাই আজই তওবা করে সঠিক আব্বীদায় ফিরে আসুন। আল্লাহ আমাদের সকলকে ইসলাম বোঝার তোফিক দিন। আমীন!
ইমামরা মাযহাব সৃষ্টি করেননি।
ভারতবর্ষের বিখ্যাত হাদীসশাস্ত্রবিদ ও হানাফীদের শিক্ষাগুরু যাকে হানাফীরা ভারতবর্ষের ইমাম বুখারী বলে থাকেন সেই শাহ আলিউল্লাহ মুহাদ্দিসদেহেলভী (রহ) বলেছেন ই’লাম আন্না না-সা-কা-নু ক্কারলাল মিআতির রা-বিআতি গাইরা মুজমিয়ীনা আলাত্-তাকলীদিল খা-লিস লিমায় হাবিন্ ওয়া-হিদিন্ বি-আইনিহী’ অর্থাৎ তোমরা জেনে রাখো যে, ৪০০ হিজরীর আগে লোকেরা কোন একটি বিশেষ মাযহাবের উপর জমে ছিল না’ (হুজ্জাতুল্লাহিল বালেগাহ; ১৫২ পৃষ্ঠা)। অর্থাৎ ৪০০ হিজরীর আগে নিজেকে হানাফী, শাফেয়ী বা মালেকী বলে পরিচয় দিতো না। আর চারশো হিজরীর অনেক আগে ইমামরা ইন্তেকাল করেন। ইমামদের জন্ম ও মৃত্যুর সময়কালটা একবার জানা যাক তাহলে ব্যাপারটা আরও স্পষ্ট হয়ে যাবে।
ইমামের নাম জন্ম মৃত্যু
আবু হানীফা (রহ) ৮০ হিজরী ১৫০ হিজরী
ইমাম মালেক (রহ) ৯৩ হিজরী ১৭৯ হিজরী
ইমাম শাফেয়ী (রহ) ১৫০ হিজরী ২০৪ হিজরী
আহমদ বিন হাম্বাল (রহ) ১৬৪ হিজরী ২৪১ হিজরী
বিশিষ্ট হানাফী বিদ্বান শাহ ওলিউল্লাহ দেহেলভী (রহ) এর কথা যদি মেনে নেওয়া যায় যে ৪০০ হিজরীর আগে কোনো মাযহাব ছিল না, এবং ৪০০ হিজরীর পরে মানুষেরা মাযহাব সৃষ্টি করেছে, তার মানে এটা দাঁড়ায় যে আবু হানীফার ইন্তেকালের ২৫০ বছর পর হানাফী মাযহাব সৃষ্টি হয়েছে। ইমাম মালেকের ইন্তেকালের ২২১ বছর পর মালেকী মাযহাব সৃষ্টি হয়েছে। ইমাম শাফেরীর ইন্তেকালের ১৯৬ বছর পরে শাফেরী মাযহাব এবং ইমাম আহমাদের ইন্তেকালের ১৫৯ বছর পর হাম্বলী মাযহাব সৃষ্টি হয়েছে। অর্থাৎ ইমামদের জীবিত অবস্থায় মাযহাব সৃষ্টি হয়নি। তাঁদের মৃত্যুর অনেকদিন পরে মাযহাবের উদ্ভব হয়েছে। আর একবার চিন্তা করে দেখুন মাযহাব বা দল সৃষ্টি করাতে কোরআন ও হাদিসে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মহামান্য ইমামরা ছিলেন কোরআন হাদীসের পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুসারী এবং ধর্মপ্রান মুসলিম। তাঁরা কি কোরআন হাদীসকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে মাযহাব তৈরি করবেন যা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ, এটা কখনো হতে পারে? যারা বলে ইমামরা মাযহাব সৃষ্টি করেছেন তারা হয় মুর্খ নয় বেইমান। তারা ইমামদের প্রতি অপবাদ দেয়।
মাযহাব সৃষ্টি হল কিভাবে?
ফারসীতে একটি প্রবাদ আছে "তোরা হাজী গো ইয়াম তু মোরা হাজী বোগো"অর্থাৎ (একজন লোক আর একজনকে বলছে, ভাই! যদিও তুমি হাজী নও তথাপি আমি তোমাকে হাজী সাহেব বলছি এবং যদিও আমি হাজী নই তুমি আমাকে হাজী সাহেব বলো) এভাবে একে অপরকে হাজী সাহেব বলে ডাকার ফলে আমরা দু-জনেই হাজী সাহেব হয়ে যাবো। এভাবেই আবু হানীফার অনুসারীদের অথবা তাঁর ফতোয়া মান্যে ওয়ালাদের অন্যেরা হানাফী একইভাবে ইমাম মালেকের ফতোয়া মাননে ওয়ালাদের মালেকী বলে ডাকাডাকির ফলে মাযহাবের সৃষ্টি হয়েছে। আজ যা বিরাট আকার ধারন করেছে। আবু হানীফা (রহ) বা তাঁর শিষ্যরা কখনো বলেননি আমাদের ফতোয়া যারা মানবা তারা নিজেদের পরিচয় হানাফী বলে দিবা। অথবা ইমাম মালেক বা শাফেয়ীও বলে যাননি যে আমার অনুসারীরা নিজেকে মালেকী বা শাফেয়ী বলে পরিচয় দিবা। ইমামরা তো বটেই এমনকি ইমামদের শাগরেদরা কিংবা তাঁর শাগরেদদের শাগরেদরাও মাযহাব সৃষ্টি করতে বলেননি। যখন আমাদের মহামতি ইমামরা মাযহাব সৃষ্টি করেননি এবং করতেও বলেননি তখন উনাদের নামে মাযহাব সৃষ্টি করার অধিকার কেন দিল?
হাদীস বিরোধী বক্তব্যের ব্যাপারে ইমামদের রায়
মাযহাবীদের মধ্যে কিছু লোক দেখা যায় যারা ইমামদের তাক্কলীদ করে অর্থাৎ অন্ধ অনুসরন করে। তারা ইমামদের বক্তব্যকে আসমানী ওহীর মতো মানে। কোরআন-হাদিস বিরোধী কোনো রায় হলেও তাতে আমল করে। তাই সেই সব লোকদের জন্য হাদীস অনুসরনের ব্যাপারে ইমামদের মতামত এবং তাদের হাদীস বিরোধী বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করার ব্যাপারে তাদের কয়েকটি উক্তি দেওয়া হল। ইনশাল্লাহ্! মাযহাবী ভাইয়েরা এ থেকে অনেক উপকারিত হবেন।
আবু হানীফা (রহ)
১) যখন হাদীস সহীহ হবে, তখন সেটাই আমার মাযহাব অর্থাৎ হাদীস সহীহ হলে সেটাই আমার মাযহাব। (ইবনুল আবেদীন ১/৬৩; রাসমুল মুফতী ১/৪; ঈক্কামুল মুফতী ৬২ পৃষ্ঠা)
২) কারো জন্য আমাদের কথা মেনে নেওয়া বৈধ নয়; যতক্ষন না সে জেনেছে যে, আমরা তা কোথা থেকে গ্রহন করেছি। (হাশিয়া ইবনুল আবেদীন ২/২৯৩ রাসমুল মুফতী ২৯, ৩২ পৃষ্ঠা, শা’ রানীর মীথান ১/৫৫; ইলামুল মুওয়াক্কিঈন ২/৩০৯)
৩) যে ব্যাক্তি আমার দলিল জানে না, তার জন্য আমার উক্তি দ্বারা ফতোয়া দেওয়া হারাম। (আন-নাফিউল কাবীর ১৩৫ পৃষ্ঠা)
৪) আমরা তো মানুষ। আজ এক কথা বলি, আবার কাল তা প্রত্যাহার করে নিই। (ঐ)
৫) যদি আমি এমন কথা বলি যা আল্লাহর কিতাব ও রাসুলের (সা) হাদীসের পরিপন্থি, তাহলে আমার কথাকে বর্জন করো। (দেওয়ালে ছুড়ে মারো)। (ঈক্কাবুল হিমাম ৫০ পৃষ্ঠা)
ইমাম মালেক (রহ)
১) আমি তো একজন মানুষ মাত্র। আমার কথা ভুল হতে পারে আবার ঠিকও হতে পারে। সুতরাং তোমরা আমার মতকে বিবেচনা করে দেখ। অতঃপর যেটা কিতাব ও সুন্নাহর অনুকুল পাও তা গ্রহন কর। আর যা কিতাব ও সুন্নাহর প্রতিকুল তা বর্জন করো। (জানেউ বায়ানিল ইলম ২/৩২, উসুলুল আহকাম ৬/১৪৯)
২) রাসুলুল্লাহ (সা) এর পর এমন কোনো ব্যাক্তি নেই যার কথা ও কাজ সমালোচনার উর্ধে। একমাত্র রাসুলুল্লাহ (সা) ই সমালোচনার উর্ধে। (ইবনু আবদিল হাদী, ১ম খন্ড, ২২৭ পৃষ্ঠা, আল ফতোয়া – আসসাবকী, ১ম খন্ড ১৪৮ পৃষ্ঠা, উসুলুল আহকাম ইবনু হাযম, ষষ্ঠ খন্ড ১৪৫ – ১৭৯ পৃষ্ঠা)।
৩) ইবনু ওহাব বলেছেন, আমি ইমাম মালেককের ওযূর মধ্যে দুই পায়ের আঙ্গুল খেলাল করার বিষএ এক প্রশ্ন করতে শুনেছি। তিনি বলেন লোকদের জন্য এটার প্রয়োজন নীই। ইবনু ওহাব বলেন, আমি মানুষ কমে গেলে তাঁকে নিরিবিলে পেয়ে বলি তাতো আমাদের জন্য সুন্নাহ। ইমাম মালেক বলেন, সেটা কি? আমি বললাম, আমরা লাইস বিন সাদ, ইবনু লোহাইআ, আমর বিন হারেস, ইয়াবিদ বিন আমার আল-মা আফেরী, আবু আবদুর রহমান আল হাবালী এবং আল মোস্তাওরাদ বিন শাদ্দাদ আল কোরাশী এই সুত্র পরম্পরা থেকে জানতে পেরেছি যে, শাদ্দাদ আল কোরাশী বলেন, আমি রাসুল(স)কে কনিষ্ঠ আঙ্গুল দিয়ে দুই পায়ের আঙ্গুল খেলাল করতে দেখেছি। ইমাম মালেক বলেন, এটা তো সুন্দর হাদীস। আমি এখন ছাড়া আর কখনো এই হাদীসটি শুনিনি। তারপর যখনই তাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে, তখনই তাঁকে পায়ের আঙ্গুল খেলাল করার আদেশ দিতে আমি শুনেছি। (মোকাদ্দামা আল জারাহ ওয়াত তা দীল- ইবনু হাতেমঃ ৩১- ৩২ পৃষ্ঠা)
ইমাম শাফেয়ী (রহ)
১) হাদীস সহীহ হলে সেটাই আমার মাযহাব।
(মাজমু ১/৬৩; শা’রানী ১/৫৭)
২) আমি যে কথাই বলি না কেন অথবা যে নীতিই প্রনয়ন করি না কেন, তা যদি আল্লাহর রাসুল (সা) এর নিকট থেকে বর্ণিত (হাদীসের) খিলাপ হয়, তাহলে সে কথাই মান্য, যা রাসুল (সা) বলেছেন। আর সেটাই আমার কথা।
(তারীখু দিমাশ্ক; ইলামুল মুওয়াক্কিঈন ২/৩৬৬,৩৬৪)
৩) নিজ ছাত্র ইমাম আহমাদকে সম্বোধন করে বলেন) হাদীস ও রিজাল সম্বন্ধে তোমরা আমার চেয়ে বেশি জানো। অতএব হাদীস সহীহ হলে আমাকে জানাও, সে যাই হোক না কেন; কুকী, বাসরী অথবা শামী। তা সহীহ হলে সেটাই আমি আমার মাযহাব (পন্থা) বানিয়া নেবো।
(ইবনু আবী হাতীম ৯৪-৯৫ পৃষ্ঠা; হিলয়াহ ৯/১০৬)
৪) আমার পুস্তকে যদি আল্লাহর রাসুল (সা) এর সুন্নাহের খেলাপ কে কথা পাও, তাহলে আল্লাহর রাসুল (সা) এর কথাকেই মেনে নিও এবং আমি যা বলেছি তা বর্জন করো।(নাওয়াবীর মা’জমু ১/৬৩; ইলামূল মুওয়াক্কিঈন ২/৩৬১)
৫) যে কথাই আমি বলি না কেন, তা যদি সহীহ সুন্নাহর পরিপন্থি হয়, তাহলে নবী (সা) এর হাদীসই অধিক মান্য। সুতরাং তোমরা আমার অন্ধানুকরন করো না। (হাদীস ও সুন্নাহর মুল্যমান ৫৪ পৃষ্ঠা)
৬) নবী (সা) থেকে যে হাদীসই বর্ণিত হয়, সেটাই আমার কথা; যদিও তা আমার নিকট থেকে না শুনে থাকো। (ইবনু আবী হাতীম ৯৩-৯৪)
ইমাম আহমাদ (রহ)
১) তোমরা আমার অন্ধানুকরন করো না, মালেকেরও অন্ধানুকরন করো না। অন্ধানুকরন করো না শাফেরীর আর না আওয়ারী ও ষত্তরীব বরং তোমরা সেখান থেকে তোমরা গ্রহন কর যেখান থেকে তারা গ্রহন করেছেন। (ইলামুল মোয়াক্কিঈন ২/৩০২)
২) যে ব্যক্তি আল্লাহর রাসুল (সা) এর হাদীস প্রত্যাখ্যান করে, সে ব্যক্তি ধ্বংসোন্মুখ। (ইবনুল জাওযী ১৮২ পৃষ্ঠা)
৩) আওযাঈ; ইমাম মালেক ও ইমাম আবু হানীফার রায় তাদের নিজস্ব রায় বা ইজতিহাদ। আমার কাছে এসবই সমান। তবে দলিল হল আসার অর্থাৎ সাহাবী ও তাবেঈগনের কথা। (ইবনু আবদিল বার-আল-জামে, ২ খন্ড, ১৪৯ পৃষ্ঠা) ইমামদের এই সকল বক্তব্য জানার পর আমরা বলতে পারি প্রকৃতই যারা ইমামদের ভালোবাসেন, শ্রদ্ধা করেন, মান্য করেন তারা ইমামদের কথা অনুযায়ী চলবেন এবং সহীহ হাদীসকেই নিজের মাযহাব বানাবেন। তাক্কলীদ করবেন না। সরাসরী সেখান থেকে গ্রহন করবেন যেখান থেকে ইমামরা করেছেন অর্থাৎ সরাসরী হাদীস কোরয়ান থেকে। ইমামরা কোনো বিষয়ে ভুল ফতোয়া (সহীহ হাদীস তাঁদের কাছে না পৌছানোর কারনে) দিয়ে থাকলে তা প্রত্যাখ্যান করা এবং সহীহ হাদীসের উপর আমল করা। আল্লাহ আমাদের সকলকে ইসলাম বোঝার ও সহীহ হাদীসের উপর আমল করার তৌফিক দিন। আমীন!
আপনার বিবেক কি সত্যি মরেই গেছে? ? মাযহাব মানা ফরজ?ওয়াজিব?সুন্নাত?
১ মাযহাব ফরয বা ওয়াজীব এটা নির্দিষ্ট করল কে?
২ কোরআন হাদিসের কোথায় মাযহাব ওয়াজীব করা হয়েছে?
৩ ইমাম আবু হানিফার আগের মুসলিমরা কোন মাযহাব মানতেন??
৪ ইমাম আবু হানিফার মা বাবা ও উস্তাদরা কোন মাযহাবের অনুসারী ছিলেন??
৫ যদি বলেন তারা সবাই মুজতাহিদ ছিলেন তাহলে বলুন তারা যে মুজতাহিদ ছিলেন এটার দলিল কি??
৬ যারা মুজতাহিদ তাদেরকে মাযহাব মানতে হবেনা এটা কোরআনের কোন আয়াতে আছে??
৭ ইমাম আবু হানিফা মুজতাহিদ হওয়ায় যদি তার নামে মাযহাব ওয়াজীব হয় তাহলে তার জন্মের আগের লাখ লাখ মানুষ মুজতাহিদ হওয়ার পরও তাদের নামে লাখ লাখ মাযহাব ওয়াজীব হলনা কেন??
৮ একজন মানুষকে মুজতাহিদ হতে হলে কম করে হলেও ২৫/৩০ বছর সময় দরকার,তাহলে এই ২৫/৩০ বছর ইমাম আবু হানিফা কোন মাযহাব অনুসরন করতেন??
৯ ইমাম আবু হানিফার মাযহাব যদি সঠিক হয়ে থাকে তাহলে ইমাম শাফেয়ী আরেক মাযহাব বানালেন কেন??
১০ হানাফি ও শাফেয়ী মাযহাব যদি ঠিক হয়ে থাকে তাহলে তাহলে মালিক আরেকটি মাযহাব বানালেন কেন??
১১ উপরের তিন মাযহাব সঠিক হলে হাম্বলী আরেকটি মাযহাব বানালেন কেন??
১২ চার মাযহাবের যেকোন একটি মানা ওয়াজীব এটা কোরআনের কোথায় বলা হয়েছে
সবার কাছে অনুরোধ। আগে পুরাটা পড়েন। তার পর মন্তব্য করবেন।
মাযহাব মানা ওয়াজিব না ফরয?
রাসুল (ﷺ) এর সাথে সবসময় সব সাহাবী থাকতেন না। কেউ নবীর (ﷺ) থেকে একটা হাদিসের বাণী শুনলে সেটা পৌছে দিতেন অন্যের নিকট। যেমন আবু হুরাইরা (رضى الله عنه) নাবী (ﷺ) এর অনেক বাণী পৌছে দিয়েছেন অন্যান্য সাহাবীদের নিকট। যেমন বিদায় হজ্বের সময় ১ লাখেরও বেশী সাহাবী ভাষন শ্রবণ করেছেন। পরবর্তীতে তারা বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে গিয়েছেন।
ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) জন্ম গ্রহণ করেছেন ৮০ হিজরীতে। তিনি প্রাপ্ত বয়স্ক হবার পর যতগুলো হাদিস পেয়েছেন এবং সংরক্ষণ করেছেন সেগুলোর উপর ভিত্তি করেই ফতোয়া দিয়েছিলেন। একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়, উনার সময় তিনিই ছিলেন বিজ্ঞ ইমাম। তবে যেহেতু তিনি সকল সাহাবাদের হাদিস সংগ্রহ করতে পারেন নাই, সকল সাহাবাদের সাক্ষাৎ পান নাই এবং যেহেতু হাদিস এর ধারক সাহাবারা বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলেন তাই তিনি যতগুলো হাদিস পেয়েছেন তার উপরেই ফতোয়া দিয়েছেন। তাইতো তার ফতোয়ায় অনেক ভুল-ভ্রান্তি ছিলো। একারণেই তার প্রিয় ছাত্রগণ তার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ফতোয়া গ্রহণ করেন নাই। ইমাম আবু হানিফাও বুঝতেন যে, তিনি হয়তো সকল সহীহ হাদীছের উপর ফতোয়া দিতে পারেন নাই। তাই তো তিনি বলেছেন,
“ইযা সহহাল হাদিসু ফা হুয়া মাজহাবা” অর্থ্যাত বিশুদ্ধ হাদিস পেলে সেটাই আমার মাজহাব বা মতামত। (১/৬৩ ইবনু আবিদীন এর হাশিয়া, পৃঃ ৬২ ছালিহ আল-ফাল্লানীর, ১/৪৬ শামী)
ইমাম আবু হানিফাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল হে শায়খ, যদি এমন সময় আসে যখন আপনার কথা কোন সহীহ হাদিসের বিপরীতে যাবে তখন আমরা কি করব? তিনি উত্তরে বলেছিলেন, "তখন তোমরা সেই সহীহ হাদিসের উপরই আমল করবে এবং আমার কথা প্রাচীরে/দেয়ালে নিক্ষেপ করবে।"
১৩৫ হিজরিতে জন্মগ্রহন কারী ইমাম শাফেঈ (রহঃ) এর বক্তব্য হলো,"তোমরা যখন আমার কিতাবে রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর সুন্নাহ বিরোধী কিছূ পাবে তখন আল্লাহর রাসুলের সুন্নাত অনুসারে কথা বলবে। আর আমি যা বলেছি তা ছেড়ে দিবে।" (৩/৪৭/১ আল হারাবীর, ৮/২ খত্বীব, ১৫/৯/১ ইবনু আসাকির, ২/৩৬৮ ইবনু কাইয়িম, ১০০ পৃঃ ইহসান ইবনু হিব্বান)।
৯৩ হিজরীতে জন্মগ্রহণকারী ইমাম মালেক রহঃ এর বক্তব্যও একই। ইমাম মালেক বিন আনাস (রহঃ) বলেছেন, "আমি নিছক একজন মানুষ। ভূলও করি শুদ্ধও বলি। তাই তোমরা লক্ষ্য করো আমার অভিমত/মতামত/মাজহাব এর প্রতি। এগুলোর যতটুকু কোরআন ও সুন্নাহ এর সাথে মিলে যায় তা গ্রহণ করো আর যতটুকু এতদুভয়ের সাথে গরমিল হয় তা পরিত্যাগ করো।" (ইবনু আবদিল বর গ্রন্থ (২/৩২)।
১৬৪ হিজরীতে জন্মগ্রহণকারী ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহঃ ছিলেন ১০ লক্ষ হাদিসের সংগ্রহ কারী। সবচেয়ে বেশী হাদিস উনার মুখস্থ ছিল এবং উনার সংগ্রহে ছিল। উনার লিখিত গ্রন্থ মুসনাদে আহমাদ এ মাত্র ২৩,০০০ এর মতো হাদিস লিপিবদ্ধ আছে। তিনিও উপরোক্ত ইমামগণের মতই বক্তব্য দিয়েছেন।
তাহলে দেখা যাচ্ছে যে, সকল ইমামই তাদের মতামতের বিপরীতে কোরআন ও সহীহ হাদিস মেতে চলতে বলেছেন। কিন্তু কেউ যদি বলেন কোরআন হাদীছে যা আছে থাক, আমাদের মাযহাব-ই মানতে হবেই হবে, তাহলে এটা হবে চরম ভুল এবং তা উপরোক্ত সম্মানিত ইমামগণের মানহায পরিপন্থিও বটে।
গ্লোবাইজেশনের যুগে জ্ঞান এখন উন্মুক্ত। মানুষ এখন সত্য মিথ্যা যাচাই করতে শিখেছে। সামগ্রিক ইসলামের চিন্তা গবেষনা এখন আর ৪ ইমামের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকছে না। প্রত্যেক যুগের শ্রেষ্ঠ আলেমদের চিন্তা ও গবেষণার ফল স্বরুপ প্রত্যেক মাস’আলা মাসায়েলে এর কোরআন হাদীছ সম্মত জবাব বের হয়ে আসছে। এভাবে প্রসিদ্ধ ৪ ইমামদের কোন কোন মতামত কোরআন সূন্নাহ এর অনুকুলে আর কোন কোন ফতোয়া কোরআন সুন্নাহ সম্মত নয়, তা মানুষ জানতে পারছে।
আলহামদুলিল্লাহ,আলেমগণ এখন আর ফতোয়া দেওয়ার সময় বলে না যে, এটা অমুক ইমামের রায় বা এটা তমুক ইমামের ফতোয়া। বরং তারা ফতোয়া দেওয়ার পর কোরআন এর আয়াত দিচ্ছেন বা হাদীছের উদৃতি পেশ করছেন। হ্যাঁ এ সকল আলেমগণ হয়তো ফতোয়ার সারাংশ সম্পর্কে ইলম হাসিল করার জন্য পূর্ববর্তী ইমামগণের গবেষনার সাহায্য নিয়েছেন। যার গবেষনা কোরআন বা হাদীছের পক্ষে গিয়েছে তারা তা গ্রহণ করেছেন, বাকীদেরগুলো ত্যাগ করেছেন। আর এটাই তো ছিলো ইমামগণের নির্দেশ!
কোরআন ও সহীহ হাদীছের দিকে আহবানকারী এই সকল আলেমগণের খেদমতের কারণে আজ সহীহ আক্বীদার লোক দিন দিন বেড়েই চলেছে। আলহামদুলিল্লাহ…!
আর যারা এখনও মাযহাবী গোড়ামীতে যুক্ত, তাদের জন্য মহান আল্লাহর এই বানী-
-যে কেউ রসূলের বিরুদ্ধাচারণ (কোরআন ও হাদিস অমান্যের মাধ্যমে) করে, তার কাছে সরল পথ প্রকাশিত হওয়ার পর এবং সব মুসলমানের অনুসৃত পথের বিরুদ্ধে চলে, আমি তাকে ঐ দিকেই ফেরাব যে দিক সে অবলম্বন করেছে এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব। আর তা নিকৃষ্টতর গন্তব্যস্থান। [সূরা নিসা-৪:১১৫]
সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ্ পাকের। আসুন আমরা মাযহাবের নামে বিভক্ত না হয়ে কুরআন ও সুন্নাহ অনুসরণ করি যাতে আমরা দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা অর্জন করতে পারি।
মনযোগ সহকারে পড়ুন সকলেই
'চার মাজহাব' সম্পর্কে
রাসূল(সাঃ) এর
ভবিষ্যদ্বাণীঃ
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ(রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নাবী(সাঃ)-এর নিকট উপস্থিত থাকা অবস্থায় তিনি একটি সরল রেখা টানলেন এবং তাঁর ডান দিকে দুটি সরল রেখা টানলেন এবং বাম দিকেও দুটি সরল রেখা টানলেন। অতঃপর তিনি মধ্যবর্তী রেখার উপর তাঁর হাত রেখে বলেনঃ এটা আল্লাহ্র রাস্তা। অতঃপর তিনি এ আয়াত তিলাওয়াত করেন এবং "এ পথই আমার সরল পথ। অতএব তোমরা এ পথেরই অনুসরণ করো এবং বিভিন্ন পথ অনুসরণ করো না, অন্যথায় তা তোমাদেরকে তাঁর পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে" [সূরা আনআম ৬: ১৫৩]
সুনানে ইবনে মাজাহ, অধ্যায়ঃ ভূমিকা পর্ব, হাদিস নম্বরঃ ১১। তাখরীজ কুতুবুত সিত্তাহ: আহমাদ ১৪৮৫৩ তাহক্বীক্ব আলবানী: সহীহ।
পৃথিবীতে যে চারটি মাসহাব হবে এ হাদীস তার জাজ্জ্বল্য প্রমাণ। হাদীসটি খেয়াল করুন, 'ডানে দুটি দাগ ও বামে দুটি দাগ' অর্থাৎ, হানাফী ও শাফেঈ একদিকে আর অন্যদিকে মালেকী ও হাম্বলী মাজহাব। আর আজকের এই ফেৎনাময় বিশ্বে মুসলিমরা যত দল, মতবাদ, ফির্কা, তরিকায় বিভক্ত হোক না কেন তবুও সবার মাঝে উক্ত ৪ মাজহাব হল কমন ফির্কা। বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে চিন্তা করুন, এদেশে দেওবন্দী ও ব্রেরলিভী ফির্কা আছে। উভয়ে নিজেদের মাঝে 'কুফরী' ফতোয়া পর্যন্তও দিয়েছে, তারপরও তারা একই 'হানাফী' মাজহাব ফির্কায় বন্দী। অনুরূপ তাবলিগী, জামাতী, হেফাজতে ইসলাম প্রায় সবাই নিজেদের মাঝে দ্বন্ধ, তবে হানাফী মাজহাব ফির্কায় বন্দী। এদেশের প্রত্যেক পীর ও পীরের তরিকা ভিন্ন ভিন্ন। কিন্তু চরমুনাই, হাটহাজারী পীর, দেওয়ানবাগী, শর্শিনাপীর, চন্দ্রপুরী, রাজারবাগী, ফুলতুলী, আটরশি, মাইজভান্ডারী ইত্যাদি যত পীর তরিকা আছে সবাই এক ফির্কা তথা 'হানাফী' মাজহাব ফির্কায় বন্দী। এখন যদি প্রশ্ন করি, 'হানাফী' মাজহাব ঠিক হলে সেই মাজহাবে এত দল ও উপদল কেন? এখন প্রত্যেক উপদল ভাবছে তার দল ঠিক, সবাই তো ঠিক না। অর্থাৎ, বাতিলের ভিতরেও আরও বাতিল। অন্ধকারের উপর আরও ঘন অন্ধকার। নবীজী হাদীসের মাধ্যমে এটায় প্রমাণ করলেন, পৃথিবীতে কমন চারটি বড় দল তৈরী হবে। বাস্তবতা দেখুন,প্রত্যেক দল উক্ত চারটি মাজহাবের কোনও না কোনও মাজহাবের তাক্বলিদকারী। হাদীসে নবীজী মধ্যে অন্য একটি রেখা টেনে বললেন, এটায় আল্লাহর পথ। অর্থাৎ, চার মাজহাব অনুসরণ করতে গিয়ে এই চিরাচরিত শ্বাশত আল্লাহ্ ও রাসূলের পথ ও মাজহাব হতে সরে যাবে অনেকে। আর সেসব মানুষকে সতর্ক করতেই রাসূল সতর্ক করছেন। এভাবে এখন হতে ১৪শ বছর পূর্বেই নবী(সাঃ) বর্তমানে বড় ফিৎনা ৪ মাজহাব নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। যা আজ বাস্তব ও চাক্ষুষ প্রমাণ দেখতেছি।
সংগ্রহকৃত AGS
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন