আল্লাহর নিকট অনেক বেশি মাল-সম্পদ চাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ যার মাল যত বেশি হবে, তার হিসাব দেওয়া ততই কঠিন হবে। বরং আল্লাহর নিকট দু‘আ করুন, যেন অন্যের মুখাপেক্ষী না হতে হয় এবং অল্পতেই তুষ্ট থেকে জীবনযাপন করতে পারেন।
.
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘বড়ই সুখের জীবন ঐ ব্যক্তির, যে ইসলামের হিদায়াত লাভ করেছে; প্রয়োজন অনুপাতে তার জীবিকার ব্যবস্থা হয়েছে এবং সে তাতে পরিতুষ্ট রয়েছে।’’ [তিরমিযি, আস-সুনান: ২৯৪৯; হাদিসটি হাসান সহিহ]
.
এমন অসংখ্য কোটিপতি আছে, যাদেরকে ‘ধনী’ বলার অবকাশ নেই। কারণ, এত এত টাকা-পয়সা থাকার পরও তাদের মনোভাব হলো ‘আরো চাই, আরো চাই’। তাদের পেট ভরে না; তারা তৃপ্ত হতে পারে না। তাদের অনেকের টাকার লোভ এত বেশি যে, কোটিপতি হওয়ার পরও ৫০০/১০০০ টাকার ঘুষ খায় বা এধরনের অন্যায় করে। যারা পরিতৃপ্ত নয়, তারা ধনী হয় কীভাবে?
.
অথচ, অনেক (আল্লাহ্ভীরু) মাদ্রাসার শিক্ষক, খেটে খাওয়া মানুষ, ছোটখাটো ব্যবসায়ী এবং অল্প বেতনের চাকুরিজীবী আছেন—সমাজে যাঁদের তেমন কোনো অবস্থান নেই—যাঁরা অল্পতেই তুষ্ট থাকতে জানেন। আল্লাহ্ তাদেরকে অল্প টাকায় তৃপ্তিদায়ক জীবনযাপনের তাওফিক দেন। অভাব-অনটন তাদের হৃদয়ের ধনাঢ্যতা কেড়ে নিতে পারে না। এই-যে হৃদয়ের ধনাঢ্যতা এবং অল্পেতুষ্টির মহান নিয়ামত, এগুলো পাওয়ার জন্য আল্লাহর দরবারে সিজদাবনত হতে হয়। এই নিয়ামত পেয়ে গেলে জীবন মধুময় হয়ে যায়। আল্লাহর নিকট দু‘আ করতে হবে, যাতে তিনি অল্পতেই বরকত দেন এবং বিপদ-আপদ, দুশ্চিন্তা-পেরেশানি ও বড় ধরনের রোগ-ব্যাধি থেকে হেফাজত করেন। দুশ্চিন্তা, মুসিবত এবং বড় রোগ থেকে আল্লাহ্ যাকে মুক্ত রাখেন, তার চেয়ে বড় ধনী কে আছে?
.
নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘সম্পদের প্রাচুর্য (প্রকৃত) সচ্ছলতা নয়; (প্রকৃত) সচ্ছলতা হলো, (অন্যের সম্পদের প্রতি) হৃদয় নির্মোহ থাকা।’’ [বুখারি, আস-সহিহ: ৬৪৪৬; মুসলিম, আস-সহিহ: ১২০]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন