পুরুষমানুষের খাই খাই বেশি?



‘আমি চিরকালই এসব অতটা পছন্দ করতাম না। তুই জোর করতিস বলেই এগিয়েছিলাম...’

দৃষ্টিকোণ ১ : সুনীতের সেক্সুয়াল চাহিদা যে এত বেশি, সেকথা আগে বুঝলে কখনওই ওর সঙ্গে ফিজ়িক্যালি এতদূর এগোত না রিয়া। গোড়ায় বোঝা যায়নি একেবারেই। একটা-একটা করে রিয়ার সমস্ত আপত্তি, লজ্জা, সবটাই যত্ন নিয়ে ভুলিয়ে দিয়েছে সুনীত। আর এখন? এককালের সেই যত্নশীল ছেলেটাই হয়ে গিয়েছে মেক আউটের ব্যাপারে অসম্ভব নাছোড়বান্দা! চাই তো চাই-ই। না পেলেই অশান্তি, ঝগড়া, বিচ্ছিরি তিক্ততা... উফ্ফ! শরীর যে কেন এত জরুরি! রিয়া বুঝে উঠতে পারে না সুনীতকে।

দৃষ্টিকোণ ২ : রিয়ার সমস্যাটা বুঝতে পারে না সুনীত। কম দিন হল না তারা কমিটেড হয়েছে। আস্তে-আস্তে জড়তা কাটিয়ে শরীর-মন, সবদিক থেকেই দু’জন-দু’জনের যতখানি ক্লোজ় হওয়া সম্ভব, কবেই হয়ে গিয়েছে তারা! তবু আজও রিয়া মাঝে-মাঝেই বেঁকে বসে। সুনীত কখনও রাগ করে ‘আগে তো এমন করিসনি’ বলতে গেলে, রিয়াও উলটে শুনিয়ে দেয়, ‘আমি চিরকালই এসব অতটা পছন্দ করতাম না। তুই জোর করতিস বলেই এগিয়েছিলাম...’

মন্তব্য : এই সমস্যাটা অনেক কপোত-কপোতীরই। খেলাচ্ছলে ব্যাপারটা শুরু হয়ে শেষ হয় গিয়ে এইধরনের তিক্ততায়। এর পিছনে একটা বড় কারণ, চিরাচরিত একটা ধারণা আমাদের অবচেতনে কাজ করতে থাকে, ছেলেমাত্রেই শরীরের খিদেয় হুঁকোমুখো হ্যাংলা আর মেয়ে মানেই বুঝি সংযমের প্রতিমূর্তি! এটা নেহাতই একটা ধারণা, শরীরী চাহিদা ছেলেদের বেশি নাকি মেয়েদের, তার তো কোনও নির্দিষ্ট মাপকাঠি নেই। তা সত্ত্বেও পারিপার্শ্বিকের প্রভাবে, কী করে যেন আমাদের অবচেতনে ঢুকে পড়েছে ‘পুরুষের খাই-খাই বেশি’, এই ধারণা!  এরকমটা হয় বলেই সুনীতকে সবসময় রিয়ার উপর চাপিয়ে দিতে হবে নিজের ইচ্ছে, সেটাও যেমন ঠিক নয়, তেমনই ‘ছেলেরা তো এরকমই হয়’ ভেবে নিয়ে সুনীতের ন্যায্য দাবিও অন্যায় মনে হচ্ছে না তো রিয়ার, সেটাও খেয়াল রাখতে হবে রিয়াকে নিজেই। সম্পর্ক মানেই তো তাই। মেনে নেওয়া, মানিয়ে নেওয়া দু’পক্ষেই। সেই করতে-করতে নিজেদের সমস্যা নিজেদের মধ্যে যত মিটিয়ে নেওয়া যায়, ততই ভাল নয় কি?

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন