বজ্রপাত: চাঁপাইনবাবগঞ্জে বরযাত্রী দলের ১৭ জনের মৃত্যু

শিবগঞ্জ ইউনিয়নে পদ্মা নদীর পাড়ের একটি ঘাটের ঘরে বজ্রপাতে

ছবির ক্যাপশান,

শিবগঞ্জ ইউনিয়নে পদ্মা নদীর পাড়ের একটি ঘাটের ঘরে বজ্রপাত হয়। (প্রতিকী ছবি)

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ ইউনিয়নে পদ্মা নদীর পাড়ের একটি ঘাটের ঘরে বজ্রপাতে সতের জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: সাকিব-আল-রাব্বি।

ওই ব্যক্তিরা বরযাত্রী দলের সদস্য ছিলেন, তবে দুর্গম এলাকা হওয়াতে দুপুর পর্যন্ত ওই বরযাত্রী দলে মোট কতজন সদস্য ছিলো এবং যারা মারা গেছে তাদের মধ্যে পুরুষ, নারী বা শিশু কতজন সেটি নিশ্চিত করতে পারেনি স্থানীয় প্রশাসন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: সাকিব-আল-রাব্বি বিবিসি বাংলাকে বলেছেন বরযাত্রী দলটি উপজেলা সদরের সুন্দরপুর ইউনিয়নের অধিবাসী।

"তারা বরযাত্রী হিসেবে সুন্দরপুর ইউনিয়ন থেকে পদ্মা নদী পার হয়ে পাকা ইউনিয়নে যাচ্ছিলো। দক্ষিণ চরপাতা এলাকায় পদ্মার তেলিখারি ঘাটে আসলে প্রচণ্ড বৃষ্টি শুরু হলে তারা ঘাটেই একটি ঘরে আশ্রয় নেয়। ওই ঘরেই বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। মৃতদেহগুলো আনা হচ্ছে এবং আমরা সেখানে যাচ্ছি," মিস্টার রাব্বী বলছিলেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ ইউনিয়নে পদ্মা নদীর পাড়ের একটি ঘাটের ঘরে বজ্রপাতে সতের জনের মৃত্যু হয়েছে

ছবির উৎস,

ছবির ক্যাপশান,

২০১১ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৭ বছরে বাংলাদেশে বজ্রপাতে সারাদেশে ১৪০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলামও এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান যে তিনিও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঘটনাস্থলের পথে রয়েছেন।

"এখন পর্যন্ত এটুকুই আমরা নিশ্চিত হতে পেরেছি যে সতের জন স্পট ডেড। বরযাত্রী দলটি নদী পার হওয়ার জন্য ঘাটে অপেক্ষা করছিলো। বৃষ্টির কারণে তারা সেখানে একটি ছোট ঘরে আশ্রয় নিয়েছিলো," বলছিলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর বজ্রপাতের পরিমাণ ও এতে হতাহতের ঘটনা বাড়ছে বলে জানিয়ে আসছে। বাংলাদেশের জাতীয় দুর্যোগের তালিকায় ২০১৬ সালের ১৭ই মে বজ্রপাত অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ২০১১ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৭ বছরে বাংলাদেশে বজ্রপাতে সারাদেশে ১৪০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বিপুল সংখ্যক গবাদি পশু মারা গেছে।

ছবির উৎসআবহাওয়াবিদদের পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশে উত্তরাঞ্চল এবং উত্তর পশ্চিমাঞ্চল বজ্রপাত-প্রবণ এলাকাগুলোর অন্যতম। গ্রীষ্মকালে এ অঞ্চলে তাপমাত্রা বেশি থাকায় এ পরিস্থিতির তৈরি হয় বলে তারা বলছেন।

বজ্রপাতের ক্ষয়ক্ষতি ঠেকানোর লক্ষ্যে দেশবাসীকে আগাম সতর্কবার্তা দিতে দেশের ৮টি স্থানে পরীক্ষামূলক ভাবে বজ্রপাত চিহ্নিতকরণ যন্ত্র বা লাইটনিং ডিটেকটিভ সেন্সর বসিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

ঢাকায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় ছাড়াও ময়মনসিংহ, সিলেট, পঞ্চগড়, নওগাঁ, খুলনা পটুয়াখালী এবং চট্টগ্রামে এই সেন্সর বসানো হয়েছে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন