জেরেমি জেসিঞ্জার নামে আমার একটা ফরাসি আলোকচিত্রী বন্ধু আছে। আমরা একই সঙ্গে কানাডায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম। ও পড়ত ফটোগ্রাফি নিয়ে, আমি আর্কিটেকচারে। তারপর ও ফটোগ্রাফিতে ক্যারিয়ার গড়েছে। আমি মেকআপকে পেশা হিসেবে নিলাম। আমি স্কুল থেকেই মোকআপ করতে খুব পছন্দ করতাম। তখন তো আর মডেল পেতাম না। নিজের ওপর নিজে ট্রাই করতাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতেও আমি নিজের ওপরেই মেকআপ করতাম। আর ওকে বলতাম, প্লিজ, আমার ছবি তুলে দাও। এখন তো ও অনেক নামকরা মডেল ফটোগ্রাফার হয়ে গেছে। এল, ভোগসহ নানা ম্যাগাজিনের কাজ করে।
জেরেমি দুবাইয়ে এসেছিল একটা ফটোশুটের জন্য। এসে আমাকে নক দিয়েছিল। জানতে চেয়েছিল আমি এখনো লোকজন ধরে ধরে সাজাই কি না, মেকআপের ভূত মাথা থেকে নেমেছে কি না। আমি বললাম যে নামেনি। আমি মেকআপকেই ক্যারিয়ার হিসেবে নিয়েছি। তখন ও বলল, ঠিক আছে, আমরা তাহলে একটা টেস্টশুট করি। সেই টেস্টশুট করতে গিয়ে একটার পর একটা ফটোশুট করলাম। তার ভেতর সবার আগে করলাম মাইসার শুট। তারপর আরেকটা করলাম। তৃতীয়টা নিজের ওপরেই করলাম। আমার মেকআপ ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট দিয়ে নিজেই নিজেকে সাজালাম। এভাবে টানা ১২টা শুট করলাম।
আমি যে বাইরের প্রোডাক্ট ব্যবহার করি না, তা নয়। বা সব সময় যে নিজের ব্র্যান্ডের প্রোডাক্টই ব্যবহার করি, তা–ও নয়। কিন্তু বাংলাদেশের মেকআপ প্রোডাক্ট মানেই নকল হবে, ভালো হবে না, এটা মোটেও ঠিক না। যখন বিদেশিরা আমার মেকআপ নিয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘এটার শেড কত? নম্বরটা কত? এই আইব্রোতে কী দিয়েছ? এই নতুন আইশ্যাডোটা কোথাকার?’ এই প্রশ্নগুলো আমার ভালো লাগে। কেননা, এগুলো আমরা বাইরের দেশের প্রোডাক্টের জন্য করি। এ জন্য আমি খুবই গর্বিত। যে আমার প্রোডাক্ট কেবল বাংলাদেশে না, দেশের বাইরেও মানুষেরা পছন্দ করছে।

আমি কোনো দিন ‘কোয়ালিটি’তে একচুলও ছাড় দিইনি। আমি সব সময় চেয়েছি যে আমার প্রোডাক্ট একবার যে ব্যবহার করেছে, সে যেন আরও একবার করে। মাইসার খুবই ভালো লেগেছে আমার সঙ্গে, কণার প্রোডাক্টের নিয়ে কাজ করে। আমাদের আসলে একটা টেস্টলুক করার কথা ছিল। কিন্তু আমরা একসঙ্গে দুটো কাজ করেছি।
লেখক: প্রধান নির্বাহী, উইমেন’স ওয়ার্ল্ড
ছবি ও ভিডিও: লেখক
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন